মুক্তির কথা মুক্তির ব্যাথা

27/10/2010 08:28

ইসলামের ইতিহাসের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অপূর্ব মিল। দেশ স্বাধীন করলো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা আর মাত্র তিন বছর পর ১৯৭৫ সালে ক্ষমতা দখল করলো দেশের স্বাধীনতা-বিরোধীরা। বঙ্গবন্ধুর মতো সহজ সরল মানষ্টিসহ কয়েক হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসী দিয়ে হত্যা করা হল। পাকি দালাল শাহ আজিজ হল প্রধানমন্ত্রী। কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল আলীম হল জিয়ার মন্ত্রী পরিষদের সদস্য। অন্যান্য সব পাকি যুদ্ধাপরাধী দালালরা, সামরিক ও বেসামরিক পদ দখল করলো। চেষ্টা করলো আমাদের বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানানোর

১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট গুটিকয়েক বন্দুকধারী বিপথগামী কুজন্মা কুলাঙ্গার এই বিশ্বকাপানো বিশ্বনেতাকে রাতের অন্ধকারে কাপুরুষের মত স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকায় আবার চন্দ্রবিন্দু (চাঁদ তারা) বসানোর হীন চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছিলো। ওরা এখনো গোটা দেশের অভ্যন্তরে গ্রামে গঞ্জে আস্তানা গেড়ে আছে ধর্মের নামে, ইসলামের নামে, ধর্মীয় শিক্ষার নামে এবং ওদেরকে যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আর্থিক সহায়তাসহ সার্বিক পরিচালনা করছে, তাদের কেউ না কেউ, কোনো না কোনোভাবে আওয়ামী লীগের ভিতরেও প্রবেশ করতে পেরেছে।

জাতিরজনকের স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়ণের ক্ষেত্রে ঠিক বঙ্গবন্ধুর মতো একই উদার নীতির বিপক্ষে কিছু কথা বলার জন্যই এ লেখা শুরু করেছি। হয়তো বুঝিনা, অথবা না বুঝেই পোদ্দারপট্টির অথর্ব প্রফুল্ল পোদ্দারের মতো দোকানে কোনো কাষ্টমার না থাকলে যেমন বিড় বিড় করত, ঠিক তেমনি কিছুক্ষণ বিড় বিড় করে ঘুমিয়ে পরবো । আমরা হচ্ছি ছাগলের তিন নম্বর। বাচ্ছা শব্দটি আর লিখলাম না। কারণ নেতানেত্রীগণ আমাদের যতোই বাচ্ছা বলে এড়িয়ে যাকনা কেনো আমরা আর বাচ্ছা নই, শুধু তাই নয়, আমাদের বাচ্ছারাও এখন মূখ ফুটে তাদের মনের কথা বলতে শিখেছে। আমাদের আগামী প্রজন্ম আমাদের পূর্বসূরিদের চেয়ে অনেক সতর্ক ও স্বচেতন মেধার অধিকারী ।এই প্রজন্মের শিশু কিশোরদের মেধা, প্রজ্ঞা আর মানসিক উৎকর্ষতার কাছে আমরা অতিশয় দুর্বল। আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্য কি করেছি ? ডিজিটাল বাংলাদেশে আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্য কি করেছি ? প্রাণঢালা ভালবাসা কি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে উপস্থাপনের জন্য যথেষ্ট ??? চার বছর অনেক স্বল্প সময় আবার অনেক দীর্ঘ সময়। আর বছর গুনতে চাইনা। এসো হাত ধরি। আমরা আমাদের বঙ্গবন্ধুর জন্য কারও দিকে চেয়ে থাকতে পারি না। আমাদের যা কিছু আছে তা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কথা বলব।

জাতিরজনকের ঔদার্য মহানুভবতা এবং অতি কোমল সহজ সরল মন মানসিকতাই তাঁর জীবনের এবং পরিবারের কাল হয়ে পৃথিবী থেকে তাঁকে অকালে সরিয়ে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর “সবুজ বিপ্লব” তথা “বাকসাল” বাস্তবায়ণ হলে আজ এ দেশ এবং এ দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠকামো হতো দখিন এশিয়ার মধ্যে সব চেয়ে উন্নত । বঙ্গবন্ধু দেশ জাতি এবং শোষিত জনগোষ্ঠীর কথা ভাববার অবসরে কখনো নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা, সন্তান সন্ততির অদূর ভবিষ্যতের কথা ভাববার অবকাশ পাননি। এমনও দিন গেছে সারা দিন গ্রামের পর গ্রাম পায়ে হেঁটে কর্মীদের সাথে, নেতানেত্রীদের সাথে দলীয় মিটিং সভা সমাবেশ করে করে সারাটি দিন অতিবাহিত করার পর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে কেউ বলে দিতেন, মুজিব ভাই, আমরাতো কিছু খাইনি আজ? যে ব্যক্তি নিজের ক্ষুধার কথা ভুলে যায় বাংলার শোষিত লাঞ্ছিত বঞ্চিত মেহনতি জনগোষ্ঠীর জন্য, সে মহান নেতা নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভাববার অবকাশ পেয়েও ভাবেননি। বঙ্গবন্ধুর সাথে ওই একই রাতে নিহত কর্নেল শওকত জামিলের স্ত্রীর কাছ থেকে জানা গেলো আরো কত নানান রকম ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু ভেবেছেন এইতো জীবন যেমন চলছে সাদা মাটা নিত্য নৈমিত্তিক অন্য আর দশজন বাঙ্গালীর মতোই। আমাদের ভাগ্য ভালো যে ১৯৭৫ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বাংলাদেশে ছিলেন না।    

জননেত্রী শেখ হাসিনার দেহে বইছে জাতিরজনকের রক্তকণিকা । তিনিও দেখেছি  কারো কোনো  অতীব হৃদয় বিদারক করুণ ইতিহাস, ঘটনা বা কারো দুঃখ বেদনার বর্ণনা শুনে অবোধ বালিকার মতো চোখ মুছতে থাকেন। কাজেই স্বভাবজাত বাঙ্গালীর কন্যা বঙ্গ বন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাও বঙ্গবন্ধুর মতোই আবেগপ্রবণ এবং অতিশয় দয়াবান। ‘এই আবেগ অনুভূতি আর দয়াশীল মনোবৃত্তিই নেত্রীত্বের ব্যক্তিত্ত্বকে প্রশাসকের আসনে দুর্বল করে ফেলে বড় অন্যায় অপরাধের ক্ষেত্রেও বজ্র কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

জাতিরজনককে হত্যার পর ওরা মেতে ওঠেছে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে হত্যার উন্মাদনায়। স্বাধীনতা বিরোধী এই খুনী মোস্তাকের অংশটি একত্রিত হয়েছে আল বদর আল শামস আর রাজাকার, পাকিস্তানের আইসিআই, আমেরিকান সিআইএ'র সাথে । বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে হত্যার নীল নকশা অংকন করেছে সাকা, বাবর, হারিস, সাঈদী, মুজাহিদ, নিজামী, কামাল হোসেন, চিশতী, ব্যারিষ্টার মঈনুল,  মেজর মতিন এবং ঘসেটি বেগম খালেদা জিয়া স্বয়ং ।

রাখে আল্লাহ মারে কে? মাঝ খান থেকে জাতি হারালো আই ভি রহমানের মত দেশপ্রেমিকাকে। আমরা হারালাম কতগুলো নিবেদিত দেশপ্রেমিক নেতানেত্রী । কতশত কর্মী ভক্ত সমর্থক অকালে পংগু হলো ২১ আগস্ট গগনবিদারী গ্রেনেড হামলায়।  শেখ হাসিনার কানে দেখা দিয়েছে শব্দতগ সমস্যা কিন্তু এবারের মত বেঁচে গিয়েছে বাঙ্গালী জাতিরজনকের জেষ্ঠ্যকণ্যা শেখ হাসিনা । যদি আমরা শেখ হাসিনাকে ওই দিন হারাতাম, আজ বাংলার ইতিহাস হতো অন্য রকম। হায়েনার কালো থাবা থেকে ২১ আগস্ট অবধারিত মৃত্যুর হাত থেকে  আল্লাহ্‌ তায়া'লা তাঁকে রক্ষা করেছেন। যুগে যুগে হিংস্র নরপশু নর ঘাতক, হিংস্র দানব দলে দলে আসবে, যাবে আর এরই মাঝে সতর্কতার সাথে বাঙ্গালী জাতিকে আগিয়ে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা আমাদের চেয়ে ভালো করেই জানেন যে তাঁর শত্রু জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর চেয়েও ভয়ানক, হিংস্র এবং শক্তিশালী। ২১ অগাস্টই তার জলন্ত প্রমান । একথা নেত্রী তাঁর বক্তব্যে অনেক মঞ্চেই উল্লেখ্য করেছেন। তারপরেও কোনো একটি আশঙ্কা আমাদের মনকে বিচলিত করে, দুশ্চিন্তার পোকাগুলো কিলবিল করে, নাড়া দেয়। কি জানি কি হয়, যদি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঢিল পড়ে যায়? যদি কোনো মীর জাফর কোথাও লুকিয়ে থেকে থাকে? কে ওদেরকে খুঁজে বেড় করবে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে অথবা সচিবালয়ের অফিস থেকে?

হতে পারে কারো কোনো ব্যক্তিগত  স্বার্থ উদ্ধার ও হাসিলের জন্যে র‍্যাবকে অর্থ দিয়ে এ কাজ করানো হয়েছে, হতে পারে লিমন সন্ত্রাসী নয়, হতে পারে সবই। যে দেশে ৩০ লক্ষ মানুষ হত্যার দায়ে ফাঁসীর বদলে মন্ত্রীত্ব উপহার দেয়া হতে পারে, যে দেশে স্বাধীনতার মহানায়ক/স্থপতিকে স্বপরিবারে হত্যা করার পরে ওই মধ্যযূগীয় বর্বরতার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করার পথ সাংবিধানিকভাবে রুদ্ধ করা হয়, সে দেশে সামান্য অস্ত্রধারী র‍্যাবের দ্বারা অনেক কিছুই সম্ভব। যে দেশে সেনাবাহিনী যখন যাকে খুশী খুন করে বলেঃ "আমিই দেশের রাজা, আমিই সেনাপতি" সে দেশে লিমনের মতো একটি সাধারণ কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে র‍্যাব উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যে কোনো অজুহাতে পঙ্গু করে দেয়াটা অতীব ক্ষুদ্র বলে আমি মনে করি।

বিষয়টি গুরুত্ব পেলো কেনো? কারন, আওয়ামী লীগের গায়ে অনেক দুর্গন্ধ তাই।  বিগত ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি জামাতের সীমাহীন দুর্নীতি, লুন্ঠন, হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস আর অরাজকতার বিরুদ্ধে এই মিডিয়া কখনই মূখ খুলেনি কেনো? বাংলাদেশে ক্রসফায়ার কোন সরকারের আমল থেকে প্রবর্তিত হয়েছে?  এ কথা মিডিয়ার পা'চাটা অর্থ লিপ্সু লোভী সাংবাদিকদের মনে করিয়ে দিতে হবে।  এখানে একটি কথা আবারো বলতে চাই, মনে রাখবেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বলেই র‍্যাবের সকল ইউনিট/সদস্য নৌকায় ভোট দিয়েছে এ কথা ভিত্তিহীন এবং হাস্যকর। ৭৫ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত কত হাজার সেনা সদস্য/অফিসার, বিডিআর সদস্য/অফিসার, পুলিশ সদস্য/অফিসার আওয়ামী লীগ নিয়োগ দিয়েছে? পরিসংখ্যানে দেখা যাবে দু'দুবার আঃলীগ ক্ষমতায় এলেও আওয়ামী সরকারের দেয়া নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজাতন্ত্রের সকল সদস্য/অফিসার (সেনা, বিডি আর, পুলিশ এবং সরকারি অফিস আদালতে) এর সংখ্যা দাড়ায় মাত্র ৫%। কাজেই প্রশাসনের সকল ক্ষেত্রে সরকারকে কঠোর হতে হয়, সতর্ক হতে হয়। সরকারের কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ণে হীম শীম খেতে হচ্ছে প্রতিটি অফিস আদালতে এবং জেলাসমূহের প্রশাসনের প্রতিটি টেবিলে প্রতিটি ক্ষেত্রে । যদি বিরোধী দলের কোনো ইস্যু না থাকে তাহলে আর কি করা। খালেদা জিয়া নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে যুব লীগ বাঁ ছাত্রলীগের নামে মিথ্যে মামলা ঠুকতে পারেন।

কারন যাদের জন্ম তারিখটাই মিথ্যের বেসাতিতে ভরপুর, তাদের জন্য দুয়েকটি মিথ্যে বানোয়াট আর ভিত্তিহীন কাহিনী রচনা করা কঠিন কোনো কাজ নয়। বিগত ৪০ বছরে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তিকে ঘায়েল করা, নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যে মামলাসহ তৃণমূল পর্যায়ে ঘরবাড়ী জমিজমা দখল, খুন, ধর্ষণ তথা বৃহৎ আওয়ামী শক্তিকে বাংলার মাটি থেকে চির তরে নিশ্চিনহ করার প্রকল্পসমূহ একাত্তুরের নির্লজ্জ হায়েনা পাকিস্তানের আইএসআই স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক দালাল রাজাকারদের দ্বারা বাস্তবায়নে অর্থ যোগান দিয়ে যাচ্ছে। আর মিডিয়ার দালাল গুলোতো আছেই। তাদেরও পত্রিকার ব্যবসা ভালো চলবে। ওরা আবার কোন দিন খালেদা জিয়াকে মাছ ধরার জাল পরিয়ে বলবে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। গোলাম আযম আর জামাত একই সূত্রে গাঁথা এবং দুটি নামই একাত্তুরের গণহত্যা খুন ধর্ষণ লুন্ঠনের সাথে অতপ্রতভাবে জড়িতছিলো। এ'দুটিকে বাদ দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার করার অর্থই জাতির সাথে প্রতারণা করা এবং বিচারের নামে একটি ভন্ডামী বা সাজানো নাটক। এ কথা কেউ না স্বীকার না করলেও আওয়ামী লীগকে স্বীকার করতেই হবে, কারন আওয়ামী লীগই এই গণহত্যার একমাত্র স্বাক্ষী ও শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা রাখে। শাক দিয়ে মাছ ঢেকে রাখা যায় না, কেউ রাখার চেষ্টা করলেও প্রকৃতির অদম্য হাওয়া তার গন্ধ বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়। এ বিধির এক অপার মহিমা। কেউ যদি লুনা মুসার বেয়াই হয়ে যুদ্ধাপরাধীর সাজা মৌকুফের জন্যে উল্টা পাল্টা বাক্য ছড়ানোর চেষ্টা করে। সবাই ক্ষমা করলেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক একটিও যদি বেঁচে থাকে, ক্ষমা করবে না। পৃথিবীর যেখানে যেভাবে থাকুক তার প্রতিবাদ করবে। এর জন্যে গড়ে উঠবে আর একটি প্রজন্ম প্লাটফর্ম যেখানে নতুন প্রজন্মের সোনার ছেলেরা দাঁড়িয়ে পড়বে একাত্তুরের ঘাতক দালালের গণহত্যার করুন ইতিহাস। সেখান থেকেই অগ্নিগিরির লেলিহান শিখা প্রজ্বলিত হবে হায়েনার বিরুদ্ধে।

আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক প্রগতীশীল রাজনৈতিক দল। বামপন্থীদের নিয়ে মাঝে মাঝে আওয়ামী লীগ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে থাকে বটে এবং এমন অবস্থা সত্তুর একাত্তুরেও ঘটেছিলো। ১৯৭১ এ জাতির দুর্দিনে ওদের কট্টর মনোভাবাপন্য কয়েকজনের ভুমিকা খুবই প্রশংসনীয় ছিলো বতে দ্বিধা নেই। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বামপন্থীদের অগ্রণী ভূমিকা বিজয় অর্জনে অনেক সহায়ক হয়েছিলো সে কথা অনেকেই জানেন। তাই ওদের এই কট্টর নীতি আমি খুব শ্রদ্ধার সাথেই সমর্থন করি। আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়িনা কিন্তু মনে প্রানে বিশ্বাসে ধ্যানে জ্ঞানে একান্তই ১০০ ভাগ মুসলিম। প্র্যয়াতঃ কমরেড ফরহাদ ভাই আমার চোখের সামনে ষ্ট্রোক করে মারা গিয়েছিলেন। তার কিছু কথা অলপ অল্প মনে আছে। তিনি বলতেনঃ তুমি নামাজ পড়তে গিয়েছিলো এ কথাটি বার বার সচিব মহোদয়কে কেনো বলতে ছিলে? তুমি ঢোল পিটিয়ে বলতে চাও যে তুমি মুসলিম এবং নামাজ পড়ো। আমি বোকা বনে গেলাম। বললাম 'না ভাই আমার ভুমি সচিব মহোদয় শুনেছেন কিনা তাই রিপিট করেছি। কারন আমি না বলেই গিয়েছিলাম। তিনি বললেন, লোক দেখানো নামাজ পড়ো না। যদি পার অন্তর থেকে পড়ো, আল্লাহ্‌ যেখানেই থাক তিনি কবুল করবেন।"

আমরা বাঙ্গালী মুসলিমের সংখ্যা যতো বেশীই হই আর কমই হই, হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খৃষ্টান ভাই ভাই, বাঙ্গালী ছাড়া মোদের কোন পরিচয় নাই" ৬৯ শ্লোগানের ভিত্তিতেই আইউব শাহীর বিরুদ্ধে গণ অভভুথান গড়ে ঊঠেছিলো। অন্যথায় তখন যদি বঙ্গবন্ধু শুধু শের ই বাংলা মাওলানা ভাসানী এবং হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ারদ্দীর পূর্ব সূত্র ধরে ইসলাম আর বিসমিল্লাহ্‌' 'র দোহাই দিয়ে আন্দোলনের ডাক দিতেন, মনে হয় আইউব শাহীর বিরুদ্ধে গণ অভভুথান সার্থক করার জন্য হাজার খানেক লোক পাওয়া যেতো । আমাদের ভিতরে এখনো পাকি পাকি গন্ধ রয়ে গেছে। জামায়াত বি এন পি'র পিতা ঘাতক জিয়াউর রহমান গোলাম আযম এবং শাহ আজিজুর রহমানের পরামর্শে এই বিসমিল্লাহ্‌ সংযোজন করেছিলো যাতে সৌদি বাবার সাহায্য পাওয়া যায়। আর আমাদের ধর্ম প্রিয় ধর্ম ভীরু বাঙ্গালী মুসলমানগণ ওই ভন্ড হুজুরের ভন্ডামীতে গলে গদ গদ হয়ে গেলেন। সাঈদীর ক্ষমতা বেড়ে গেলো ১০০০০ মেগাওয়াট। আর ওই সুন্দরী ঘসেটি বেগম যে "ওজু কতো ফরজ এবং নামাজ কতো ফরজ? সে কথাই জানে না এ কথাটি আপনি কী করে জামাত বি এন পি'র সমর্থকদের বুঝাবেন?

আমি ক্ষমা চাইছি দেরীতে শীবের গীত গাইবার জন্য। আমি একটা কথা আগেই বলে রাখি যে আমি কিন্তু রাজ্জাকভাইয়ের সরাসরি রাজনৈতিক কর্মী ছিলাম ৬৬ থেকে ৭১ পর্যন্ত। আমি নিজে দাদা নামের গাঞ্জাখোর গুরুর দীক্ষা নেবার সুযোগ পাইনি কিন্তু তার কর্মকাণ্ডের সব সংবাদাদি তাতক্ষ্ণিকভাবে জানতে পারতাম। বিশেষ করে বি এল এফ এর সাথে রাজ্জাকভাই, মনিভাই সরাসরি জড়িত ছিলেন। জুয়েল শুরুতেই একটি সুন্দর ক্যাপশন দিয়ে আরম্ভ করেছে আর সেটি ছিলো রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ সি আ খানের ভন্ডামী প্রসঙ্গে। এই বড়াকে আবশ্যই আমাদের শ্রদ্ধা করতে হবে যেমন শ্রদ্ধা করতে হবে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকেও। আমাদের আপনভাই, চাচা, ফুফা, দাদা অথবা অন্য কোনো একান্তজন বদ্ধ উন্মাদ হলে পারা প্রতিবেশির সাথে তাল মিলিয়ে আমরা তো জুতা নিক্ষেপ করতে পারিনা। কারণ ওরা স্বাধীনতার স্বপক্ষশক্তি। আ স ম আ রব এবং শাহজাহান সিরাজো ওই একই সারির ব্যর্থ অপদার্থ মুক্তিযোদ্ধা এবং সংগঠক । ওরা আছে বলেইতো ১৭ কোটি মানুষ মুল্যায়ণ করতে পারে যে " কে চোর আর কে পুলিশ? এই বুড়ার প্রসঙ্গে ইতিপূর্বে ফেসবুক বন্ধু হাবীব, জুয়েল, রনি, রতন মজুমদার, এ, কে আজাদ অনেকলেখালেখি করেছি। কি হবে? আওয়ামী লীগের কি আর কোন কাজ নেই যে ওদের পিছনে তাড়া করে বেড়াবে? ওনার কিছু শীষ্য আছে, তার মধ্যে " বিশ্ব লুইচ্ছা বাবা সেফাত আলী নং ১, মিল্টন হাসনাত নং ২, খালেদুর রহমান সাকিল নং ৩, এদের অনেকে অর্থের লোভে নিজের ধর্মকে পরিবর্তন করে ইসলামের বিরুদ্ধে এবং জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু তথা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙ্গালীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগ কর্তৃক ৭১’এর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব বিষয়ক ভুল তথ্য প্রচারে ঊঠে পরে লেগেছে। মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন কাহিনী রচনা করছে মুজিব বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতার নামি নিয়ে। শাকিল বঙ্গবন্ধুর সরাসরি একটি আইডি চালায়, শেখ হাসিনা ফ্যান ক্লাব একটি গ্রুপ চালায়, বাংলার ডাক, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। মাঝে মধ্যে সুযোগ মতো যাদুমিয়া, ভাসানী, সিআখানের ইতিবৃত্ত তুলে ধরে। সেফাত উল্লাহ্‌ সাকিলের সকল অর্থের যোগান দেয়। আর আমাদের মধ্যে ঘাপ্টি খেয়ে বসে থাকা অস্ত্রেলিয়ার নাগরিক মিল্টন হাসনাত worldwide liaison and coordinator হিসেবে কাজ করছেন। দেশে আরো অনেক নূতন IT expert educated young ছেলে মেয়েদের সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এই মেয়েদের সংগ্রহের কাজটি সাকিলের প্রিয়াতমা স্ত্রী রুপা করে বেড়াচ্ছেন।

 

একটি সদ্য স্বাধীন্তাপ্রাপ্ত দেশের প্রধান হিসেবে জাতিরজনকের কাছে আমাদের কতোখানি চাওয়া পাওয়া ছিলো? কি চেয়েছিলাম? আর কি পেয়েছি? তিনি কি জাতিকে স্বাধীনতা ও বুকের তাজা রক্ত ছাড়া অন্য কিছু দেবার সময় পেয়েছিলেন? দেশ গড়ার কাজে জাতিরজনককে এই সি আ খান, গো আযম, জিয়া, নিজামীরা কোন সুযোগ দেয়নি। যে গাছ জাতির জনক রোপণ করেছিলেন, সে গাছের ফলতো অনেক দূরের কথা, ফুল ফুটবার আগেই তাঁকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছে। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর প্রশাসনিক জীবনটাকে ব্যর্থতার কালিমা লেপন করে রাষ্ট্রীয় সমৃদ্ধির পথে বাধার প্রাচীর গড়ে তুলেছিল এই রব জলিল'গং রা। তাদের সাথে ছিলো পাকিস্তান চীন লিবিয়া, সৌদি আরাবিয়া এবং খোদ বড় মিয়া সি আই এ। স্পর্শকাতর বিষয়গুলী নতুন প্রজন্মকে সহজভাবে বুঝানোর একটি নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে, শে দায়িত্বটি কে নেবে? । এরাই ৭৩-৭৪ এবং ৭৫ এর আগষ্ট পর্যন্ত জাসদ গঠন করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ৭১ সালে জমা না দেয়া বিপুল পরিমাণের অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ নিয়ে মাঠে ময়দানে, গ্রামে গঞ্জে স্বশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলে দ্বিতীয় বিপ্লবের নামে। ওদের মূখে ছিলো প্রতি বিপ্লবের ডাক। ওরা বলতো দেশ স্বাধীন হয়নি তাই প্রতি বিপ্লবের প্রয়োজন। এভাবে ওরা হত্যা করে দেশের হাজার হাজার আওয়ামী নেতাকর্মী চেয়ারম্যান মেম্বার ভক্ত অনুসারীদের। বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবদ্দশায় নিজের জীবনের সমস্ত আনন্দ ভোগ বিলাস, উল্লাস উচ্ছাস আবেগ অনুভূতি হাসি কান্না দুঃখ বেদনা সমভাবে ৯ কোটি মানুষের মাঝে বন্টনের চেষ্টা করেছিলেন। আর এই বুইড়া ছাগল প্রতিবিপ্লবের নামে জাসদ গঠণ করে বঙ্গবন্ধুকে পরাজিত করার জন্য।মেজর জলিল, মেজর জিয়াউদ্দীন এবং কর্নেল তাহেরও এর সাথে জড়িত ছিলো। এ কথা আমি মুক্তির বানোয়াট বাঁ ভিত্তিহীন গদ্য রচণা নয়, এই হচ্ছে ইতিহাস, যদি ভাই কেউ রাগ করেন, সেটা আপনার ব্যাপার কিন্তু ঘটনা বোধ করি আপনারও জানা আছে।আপনাদের সি আ খান দাদাভাই কেনো বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রী পরিষদের সদস্য হতে পারেন নি? কারো কাছে কোনো সদুত্তর থাকলে জানাবেন? জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কিন্ত মাওলানা ভাসানীকে বাপের মতো শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু তারপরেও এতো ব্যবধান কেনো ছিলো জানেন? কেনো বঙ্গবন্ধুর অকাল মৃত্যুতে মাওলানা সাহেব খুশি হয়েছিলেন।  জাসদ নেতা মতিন সাহেব কে জিজ্ঞেস করবেন জানতে পারবেন। ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া একটি সদ্য স্বাধীন সার্বভৌম দেশে প্রতি বিপ্লবের নামে সশস্ত্র বিপ্লবের কি প্রয়োজন ছিলো বলেন? কার বিরুদ্ধে প্রতি বিপ্লব? যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ গড়ার কাজে সহযোগিতার বদলে প্রতি বিপ্লবের নামে দেশে অরাজকতার সৃষ্টি করা দেশের মানুষের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করা তথা বঙ্গবন্ধুর সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালণায় ব্যর্থ করে দেয়া কোন ধরনের দেশাত্ববোধ আপনার কাছে কোনো ব্যাখ্যা আছে? এবং এর সব কিছুর মূলে দাদাভাই আ স ম রব মেজর জলিল শাহজাহান সিরাজ দায়ী। যদি ভুল বলে থাকি ক্ষমা করবেন হয়তো বুদ্ধি জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারনে বলেছি । একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সব আমার চোখে দেখা সেই ৭১ এর ভারত থেকে শুরু করে ২০০১ পর্যন্ত।মহান ব্যক্তিত্ত্ব অতীশ দিপংকর আর কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ আমাদের কতটুকু দিয়েছেন, তার হিসেব আমার এই অল্প জ্ঞানে দেবার চেষ্টা বৃথা এ কথাটাই ক্লাস ৮ এ একটি বাংলা রচনায় লিখেছিলাম এবং আমি সে রচনায় যে মারক্স পেয়েছিলাম, তা' বলার মতো নয়, কিন্তু তখন বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গে যদি হতো তাহলে বোধ করি আমার চেয়ে কম সংখ্যক মার্ক্স কেউ পেতো না। কারন এই মহা সমুদ্রকে নিয়ে লেখার যোগ্যতাইতো আমার নেই। ভালোবাসি, ভালোবাসি ,

হে পিতা তব চরন ধরিতে দিয়েছিলে মোরে তাইতা আমি ধন্য।

আমার যাহা কিছু সব হোক তোমারি জন্য।

অতীশ দীপংকর আর কবি গুরুর সমস্ত সুনাম আর অবস্থানকে ছাড়িয়ে যে বাঙ্গালী সমগ্র বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিলেন সেইতো বঙ্গবন্ধু।

muktimusician.webs.com